একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার আগে বা অনলাইনে ব্যবসায় পরিচালনা করার জন্য প্রথমে আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের উপর ভিত্তি করে হোস্টিং বাছাই করতে হবে । এখন মনে একটি প্রশ্ন আসতে পারে যে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য কোন ধরনের হোস্টিং ভাল? হোস্টিং বিভিন্ন প্রকার আছে যেমনঃ ক্লাউড, ভিপিএস, ওয়েব হোস্টিং, ডেডিকেটেড এবং ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং। আজ এখানে শেয়ার্ড হোস্টিং এবং ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং সম্পর্কে আলোচনা করব-
শেয়ার্ড হোস্টিং
যারা নতুন ব্যবসা শুরু করছেন তাদের জন্য শেয়ার্ড হোস্টিং একটি বেশ জনপ্রিয় হোস্টিং সেবা। কারন এটি সাশ্রয়ী এবং শুরু করার জন্য বেশ ভালো। এটি এমন একটি ওয়েব হোস্টিং সেবা, যেখানে একটি মাত্র সার্ভারের সাথে একাধিক ওয়েব সাইট হোস্ট করা হয়ে থাকে । এবং একটি সার্ভারের (Processor, RAM, storage, CPU ও bandwidth)- অন্যান্য ব্যবহারকারিদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়।
সুবিধা
– শেয়ার্ড হোস্টিং খুব সহজে ব্যবহার করা যায় এবং তার জন্য কোন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। এটি যে কোন ধরনের ওয়েব সাইটে হোস্ট করা যায় ।
– সবথেকে বেশি ভাল হয় ছোট-ছোট সাইট গুলা হোস্ট করা, যেমন যে সাইটগুলাতে সাধারণত মাসিক ভিজিটর ২০-৩০ হাজারের মত আসে।
-এছাড়া শেয়ার্ড হোস্টিং-এর প্রদানকারীরা তার ব্যবহারকারিদের একটি কন্ট্রোল প্যানেল দিয়ে থাকে যার মাধ্যমে খুব সহজে ওয়েব সাইটের কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়।
অসুবিধা
স্বল্প মূল্য এবং ক্রেতার চাহিদা থাকার কারনে অধিকাংশ কোম্পানী শেয়ার্ড হোস্টিং দিয়ে থাকে কিন্তু নিদির্ষ্ট করে কখনোই তাদের সীমা বলে না। যার জন্য বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় কিছুদিন পর সাইট ডাউন হয়ে গেছে। এছাড়া ওয়েব সাইটে যদি ট্রাফিক বা লোড বেশি থাকে সেক্ষেত্রেও এর প্রভাবে অন্য ওয়েব সাইটগুলা ডাউন হয়ে যাবে, যার ফলে ডাউন হয়ে যাওয়া ওয়েবসাইটে ভিজিটর ঢুকতে পারবে না । এ কারণে অনেক ভিজিটর হারাতে হয়।
শেয়ার্ড হোস্টিং-এ নির্দিষ্ট কিছু উপাদান যা অনেকগুলা হোস্টিং ব্যবহারকারির মধ্যে ভাগ করে দেওয়া থাকে, যার ফলে কে কোন ধরনের কি সাইট হোস্ট করছে তা ট্রাক করা যায়না। ফলাফল – এগুলো ম্যালওয়ার ও ভাইরাস দ্বারা সহজেই সংক্রমিত হতে পারে । আর একটি সাইট আক্রান্ত হলে (যেহেতু তারা একই সার্ভার শেয়ার করছে) স্বাভাবিকভাবেই ওই সার্ভারের বাকি সাইটগুলোও আক্রান্ত হয় ।
ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং
ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং হচ্ছে এমন একটি হোস্টিং যা ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা তৈরী ওয়েবসাইটকে সম্পূর্ণরূপে অপটিমাইজ করে এবং সেই সাথে ওয়েবসাইটের সিকিউরিটি প্রদান নিশ্চিত করে। ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং আরো একটি ব্যাপার নিশ্চিত করে যে এটি খুব সহজেই ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করা যায় যা ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারীকে ওয়েবসাইট তৈরিতে বাড়তি সুবিধা প্রদান করে।
সুবিধা
-ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে ভিজিটর বেশি হলেও সাইটি কখনো ডাউন হবে না । এটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা, যা আপনার ওয়েব সাইটকে হ্যাকিং হতে সুরক্ষিত রাখবে।
-এছাড়া ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার প্রণালী খুবই সহজ, এবং এটি বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান (SEO) সরঞ্জাম সরবরাহ করে যা ওয়েবসাইটটিতে SEO সহজ করে তোলে।
-আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং ব্যবহার করেন, তবে আপনাকে আপডেট নিয়ে ভাবতে হবে না কারন ওয়ার্ডপ্রেসের থিম ও প্লাগিনগুলি প্রতিনিয়তই অটোমেটিক আপডেট নিয়ে থাকে ।
-ওয়েবসাইটের ব্যাক-আপ থাকা খুবই গুরুত্তপুর্ন। প্রতিটি ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিংয়েই অটোমেটিক ব্যাক-আপ সিস্টেম থাকে। কাজেই, ব্যাক-আপ নিয়েও ভাবতে হয় না।
অসুবিধা
যেহেতু সার্ভারটি শুধুমাত্র ওয়ার্ডপ্রেস এর জন্য নির্মিত, তাই আপনি শুধুমাত্র ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে পারবেন। তবে ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং অন্যান্য হোস্টিং এর তুলনায় বেশি ব্যয়বহুল ।
0 Comments